থানচির দর্শনীয় স্থানসমূহ ও ভ্রমণ গাইড

বান্দরবানের থানচি ভ্রমণে গেলে কোথায় বেড়াবেন এখানকার দর্শনীয় স্থান এবং থানচি ভ্রমণ গাইড নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।

থানচি ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন? থানচি ভ্রমণ করার জন্য অবশ্যই আপনাদের একটি সঠিক ভ্রমণ গাইডলাইনের প্রয়োজন পড়বে।

চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হলো থানচি যা বান্দরবানের একটি বৃহত্তর উপজেলা হলেও এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং রোমাঞ্চকর দর্শনীয় স্থানগুলোর জন্য দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

তবে থানচি ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোথায় থাকবেন, কিভাবে যাবেন, কোথায় খাওয়া দাওয়া করবেন এ সকল বিষয়ে জানার জন্য একটি সঠিক গাইডলাইনের প্রয়োজন।

আজকে আমরা থানচি ভ্রমণ গাইড সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

থানচির দর্শনীয় স্থানসমূহ – যা অবশ্যই দেখবেন

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার দক্ষিণ পূর্বাংশে অবস্থিত থানচি হলো বান্দরবানের একটি বৃহত্তর উপজেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর থানচি উপজেলার আয়তন হলো ১০২০.৮২ বর্গ কিলোমিটার (২,৫২,২৫০ একর) যা আয়তনের দিক থেকে বর্তমানে বান্দরবান জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।

১৯৭৬ সালে থানচিকে একটি থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে থানচিকে বান্দরবানের একটি উপজেলা হিসেবে প্রতিস্থাপন করা হয় এবং বর্তমানে থানচি উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। মারমা শব্দ থাইন চৈ অর্থাৎ বিশ্রামের স্থান শব্দ থেকেই থানচি শব্দের উৎপত্তি।

সাঙ্গু নদী ও রেমাক্রি খাল এই থানচি উপজেলার মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। থানচি পাহাড়, ঝর্ণা , লেক, জলপ্রপাত, বন্যপ্রাণী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।

থানচি উপজেলায় রয়েছে জনপ্রিয় কিছু দর্শনীয় স্থান যেমন নাফাখুম জলপ্রপাত, বড়পাথর বা রাজা পাথর, ছোট পাথর , সাকা হাফং, তমা তুঙ্গি, বাকলাই জলপ্রপাত, আমিয়াখুম জলপ্রপাত, ক্রেওকাডাং ইত্যাদি যা বর্তমানে দর্শনার্থী এবং পর্যটকদের কাছে বেশ বিখ্যাত।

১. আমিয়াখুম ঝর্ণা

আমিয়াখুম ঝর্ণাকে বলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রত্ন। এর পানির স্রোত নিচে ক্রিস্টালের মতো পরিষ্কার এবং আশপাশের পরিবেশ এক কথায় মনোমুগ্ধকর। ঝর্ণার পাশে পাহাড়ি পাথর আর ঘন সবুজ জঙ্গলের সমাহার আপনাকে প্রকৃতির গভীরতায় নিয়ে যাবে। এটি থানচি এলাকার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ট্রেকিং স্পটগুলোর একটি।

থানচি থেকে নৌকায় রেমাক্রি পৌঁছানোর পর ট্রেকিং করে আমিয়াখুম ঝর্ণায় যেতে হয়।

২. নাফাখুম ঝর্ণা

নাফাখুম ঝর্ণা হলো বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জলপ্রপাত। এটি স্থানীয়ভাবে ‘মিনি নাইয়াগ্রা’ নামে পরিচিত। ঝর্ণার পানির স্রোত আর চারপাশের ঘন সবুজ অরণ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। বিশেষ করে বর্ষার সময় এখানে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে যাওয়ার জন্য বেশ সাহসী ট্রেকিং প্রয়োজন।

বান্দরবান থেকে থানচি হয়ে নৌকায় রেমাক্রি এবং সেখান থেকে ট্রেকিং করে নাফাখুমে পৌঁছাতে পারবেন।

৩. রেমাক্রি নদী

রেমাক্রি নদী হলো এক অপূর্ব পাহাড়ি নদী, যার স্বচ্ছ পানিতে পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি দেখে মনে হয়, যেন স্বপ্নের মতো দৃশ্য। নদীর পাড়ে অবস্থিত রেমাক্রি বাজার ছোট্ট হলেও আকর্ষণীয়। এখান থেকে বিভিন্ন পাহাড়ি খাবার এবং হস্তশিল্পের জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

থানচি থেকে সরাসরি নৌকায় রেমাক্রি বাজারে পৌঁছানো যায়।

রেমাক্রি খাল - থানচির দর্শনীয় স্থান

৪. তিন্দু ভ্যালি

তিন্দু ভ্যালি হলো থানচির একটি বিখ্যাত পর্যটন স্পট। পাহাড়, নদী, এবং পাথরের রাস্তার সমন্বয়ে গঠিত এই জায়গা তার অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এটি একটি চমৎকার গন্তব্য। ভ্যালির শান্ত পরিবেশ এবং মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিনভর কাটানোর জন্য আদর্শ।

বান্দরবান থেকে চাঁদের গাড়িতে থানচি এবং সেখান থেকে নৌকায় তিন্দু ভ্যালিতে যাওয়া যায়।

কিভাবে যাবেন থানচি

ঢাকা থেকে থানচি যাওয়ার জন্য প্রথেমেই আপনাকে ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে হবে। বান্দরবান থেকে থানচির দূরত্ব প্রায় আরও প্রায় ৭৬ কিলোমিটার।

বাসে থানচি যাবেন যেভাবে

বান্দরবান যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথেমেই ঢাকার গাবতলী, কলাবাগান, সায়েদাবাদ থেকে রাত ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে যেই বাস গুলো ছাড়ে যেমন হানিফ, ইউনিক, ডলফিন, শ্যামলি ইত্যাদি পরিবহনে করে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।

এই বাস গুলোতে এসি ও নন এসির উপর ভিত্তি করে ভাড়া জনপ্রতি ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

রাতে ঢাকা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পরের দিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে আপনি বান্দরবান পৌঁছে যেতে পারবেন।

বান্দরবান যাওয়ার পর সেখান থেকে বাস, জীপ বা চান্দের গাড়ি ভাড়া করে আপনাকে থানচি যেতে হবে এবং এক্ষেত্রে বাস ভাড়া জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হয়ে থাকে আর সময় লাগে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা।

ট্রেনে

ঢাকা থেকে ট্রেনে করে বান্দরবান যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমেই ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে সোনার বাংলা, মহানগর, সুবর্ণ ইত্যাদি পরিবহনের ট্রেনে করে চট্টগ্রাম যেতে হবে এবং চট্টগ্রাম পৌঁছানোর পর সেখান থেকে বান্দরবান যেতে হবে।

বিভিন্ন শ্রেণী ভেদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার ট্রেন ভাড়া জনপ্রতি ৩৪৫ থেকে ১২২৯ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বান্দরবান থেকে থানচি যেতে হলে আপনাকে এরপর বাসে অথবা প্রাইভেট জীপে করে যেতে হবে।

রিজার্ভ / প্রাইভেট জীপ বা চান্দের গাড়িতে করে থানচি যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ৫০০০ থেকে ৬০০০ টাকা ও সময় লাগবে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা এবং এক গাড়িতে ১২ থেকে ১৪ জন যাত্রী অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারবে।

কোথায় থাকবেন

থানচিতে যাওয়ার পর কোথায় থাকবেন বা কোথায় রাত্রি যাপন করবেন সে নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থেকে থাকেন। থানচিতে কিছু হোটেল এবং গেস্ট হাউজ আছে যেখানে আপনি রাতে থাকতে পারবেন।

হোটেল বা রিসোর্ট

থানচি উপজেলায় অনেক হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে যেখানে আপনারা রাত্রি যাপন করতে পারবেন। থানচির বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্ট এর মধ্যে আপনার বাজেট ও পছন্দ অনুযায়ী একটি হোটেল বা রিসোর্ট বেছে নিতে পারেন।

থানচির আশেপাশের বিভিন্ন হোটেলে রিসোর্ট গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হোটেল নাইট হ্যাভেন, থানচি রিসোর্ট, থানচি ইন, ফানুশ রিসোর্ট, নীলগিরি হিল রিসোর্ট, থানচি হোটেল ইত্যাদি।

থানচির আশেপাশের এই হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর ভাড়া প্রতিরাতে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

গেস্টহাউজ

খামচির কিছু উল্লেখযোগ্য গেস্টহাউস এর নাম হলো থানচি গেস্ট হাউস , প্রিয়ন্ত গেস্ট হাউস , মায়া গেস্ট হাউস এন্ড রেসিডেন্সিয়াল , হিমালয় গেস্ট হাউস , থানচি কুটির, সাতকানিয়া হোটেল , থানচি আবাসিক হোটেল, থানচি অতিথিশালা, সিং গেস্ট হাউস ইত্যাদি।

থানচির গেস্টহাউজ গুলোর ভাড়া প্রতিরাতে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

স্থানীয়দের বাসা

থানচিতে রাত্রি যাপন করার জন্য এখানে অনেক স্থানীয়দের ঘরে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা আছে। এখানে রাত্রিযাপন করার জন্য বা থাকার জন্য অবশ্যই আপনাদের আদিবাসীদের সাথে যোগাযোগ করে নিতে হবে। থানচিতে এ ধরনের স্থানীয় বাসাবাড়িতে থাকার খরচ সাধারণত খুবই কম হয়ে থাকে।

আপনি যদি থানচি ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে ভ্রমণের পূর্বেই আপনাকে রাত্রিযাপন করার জন্য একটি ভালো হোটেল বা রিসোর্ট এর ব্যবস্থা করে নিতে হবে।

বিশেষ করে আপনি যদি কেওক্রাডাং যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তাহলে আগে থেকেই একটি থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে নেয়া উচিত কারণ ভ্রমণের মৌসুমে গেলে সেখানে থাকার জায়গা পাওয়া খুব একটা সহজ হয় না।

কোথায় খাবেন

থানচির আশেপাশে অনেক স্থানীয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে পর্যটক ও দর্শনার্থীরা খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে।

স্থানীয় রেস্টুরন্টস

থানচির আশেপাশে অনেক স্থানীয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে পর্যটক ও দর্শনার্থীরা খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে।

থানচির কিছু স্থানীয় রেস্টুরেন্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যোগ্য হলো- তংমা হ্যাং রেস্টুরেন্টস, সাতকানিয়া হোটেল, থানচি তং মা হ্যাং রেস্টুরেন্ট, শাঙ্গু রেস্টুরেন্টস এন্ড মুন্ডি হাউস, তাজিংডং হোটেল, থানচি ভাত ঘর, পেটুক রেস্টুরেন্ট, সাতকানিয়া ভাত ঘর, থানচি সিজন ফুড ইত্যাদি।

থানচির এই স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতেই স্থানীয় লোকজন এবং দর্শনার্থী ও পর্যটকদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।

থানচি ভ্রমণ করতে হলে আপনি আপনার বাজেট পছন্দ অনুযায়ী একটি রেস্টুরেন্ট নির্বাচন করে তাতে ব্রেকফাস্ট , লাঞ্চ বা ডিনার করতে পারবেন।

থানচির একটি স্থানীয় খাবার হলো বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী খাবার মুন্ডি যা স্থানীয় মানুষসহ পর্যটকদেরও একটি আকর্ষণের বস্তু।

তবে মুন্ডি ছাড়াও স্থানীয় খাবারের মধ্যে আরো রয়েছে জুম চালের ভাত, সাদা ভাত, পাহাড়ি মুরগি , সাঙ্গু নদীর মাছ , ডিম ,পরোটা, আলু ভর্তা ,পাহাড়ি সবজি , ডাল ইত্যাদি।

থানচির আশেপাশে অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে এই স্থানীয় খাবার গুলো পাওয়া যায় এবং স্থানীয় লোকজন এবং পর্যটকদের কাছেও এই খাবারগুলো বেশ সুপরিচিত।

থানচি ভ্রমণে সতর্কতা ও টিপস

সবসময় একজন স্থানীয় গাইড সঙ্গে রাখুন। বর্ষাকালে রাস্তা পিচ্ছিল হয়, তাই উপযুক্ত জুতো পরুন। খাবার এবং পানীয় সঙ্গে রাখুন কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে দোকান পাওয়া কঠিন। নদীতে নৌকাভ্রমণের সময় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন। যারা সাঁতার পারেন না, তারা অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরিধান করবেন।

স্থানীয় শিষ্টাচার এবং নিয়মকানুন

থানচি ভ্রমণের ক্ষেত্রে এর স্থানীয় কিছু শিষ্টাচার এবং নিয়ম কানুন সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জেনে যেতে হবে।

থানচির স্থানীয় শিষ্টাচার ও নিয়ম কানুন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

  • থানচিতে ভ্রমণের সময় অবশ্যই স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে এবং ভদ্র আচরণের পাশাপাশি তাদের সাথে সম্মানের সহিত কথা বলতে হবে।
  • স্থানীয়দের সাথে সবসময় শান্ত ও মার্জিত ভাষায় কথা বলতে হবে।
  • চলাফেরার ক্ষেত্রে ধাক্কাধাক্কি বা হট্টগোল করা যাবে না।
  • থানচিতে অনেক আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করে আর তাই সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আদিবাসীদের ঐতিহ্য ,রীতিনীতি ও সংস্কৃতিকে যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে হবে।
  • থানচিতে অনেক ঝর্ণা এবং জলপ্রপাত রয়েছে তাই ঝরনা ও জলপ্রপাতের পানিতে প্রবেশ করার আগে স্থানীয়দের পরামর্শ নিতে হবে এবং অবশ্যই পানি অপরিষ্কার করা যাবে না।
  • থানচিতে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী রয়েছে তাই চলাচলের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
  • থানচির রাস্তাঘাট খুবই দুর্গম আর তাই গাড়ি চালানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
  • থানচিতে আবহাওয়া খুবই পরিবর্তনশীল আর তাই থানচি ভ্রমণের পূর্বে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিতে হবে।
  • থানচিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ করে তাদের রীতিনীতি সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে এবং তাদের স্থানীয় শিষ্টাচার ও নিয়ম কানুন অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
  • থানচিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের সাথে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

থানচি ভ্রমণের ক্ষেত্রে উপরোক্ত নিয়ম কানুন গুলো এবং স্থানীয় শিষ্টাচার গুলো মেনে চললে তা আপনার থানচি ভ্রমণকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে এবং স্থানীয়দের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করবে।

স্থানীয় যানবাহন

থানচির রাস্তাঘাট খুবই দুর্গম ও এবড়োথেবড়ো হওয়ায় সেখানে সব ধরনের যানবাহন পাওয়া না গেলেও কিছু স্থানীয় যানবাহন পাওয়া যায় আর তাই থানচিতে যানবাহনের ভাড়া খুবই কম।

থানচির স্থানীয় যানবাহন গুলো হলো:

  • মোটরসাইকেল: থানচির সবচেয়ে জনপ্রিয় যানবাহন হলো মোটরসাইকেল এবং এখানের স্থানীয় এবং দর্শনার্থীরা মোটরসাইকেলের মাধ্যমেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। থানচির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রাস্তার ঘাট খুব খারাপ আর তাই এখানে স্থানীয় যানবাহন হিসেবে মোটরসাইকেল লক্ষ্য করা যায়।
  • জিপ: থানচির একটি স্থানীয় যানবাহন হলো জিপ যা দিয়ে স্থানীয় লোকজন এবং পর্যটকরা বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়াতে পারে। থানচির সবচেয়ে আরামদায়ক যানবাহন হলো জিপ এবং এই জিপে করে বিভিন্ন পাহাড় পর্বতে ঘুরে বেড়ানো যায়।
  • চান্দের গাড়ি: থানচির আরও একটি স্থানীয় যানবাহন হলো চান্দের গাড়ি যা ব্যবহার করে থানচির আশেপাশের এলাকা ঘুরে বেড়ানো যায়।

শেষ কথা

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা বর্তমানে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

তাই থানচি ভ্রমণের পূর্বে এর যাবতীয় সকল বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে ট্যুর গাইড ভাড়া করতে হবে এবং অবশ্যই থানচি ভ্রমণের সকল নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।